মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারী, ২০১৮

পিচ্চির জন্য জামা-কাপড় কিনতে হবে। কাল বছরের প্রথম দিন যে!

মাত্রই ঐশীর সাথে ব্রেকাপ হয়েছে আমার। আলো ঝলমলে হাতিরঝিলকেও বড় ফিকে মনে হচ্ছে। ল্যাম্পপোস্টের বাতিগুলো যেন লো-ভোল্টেজের শিকার।
একেবারে স্থির হয়ে বসে আছি, চোখ থেকে জল পড়ছে। মুখটা দুই হাঁটুর ভাজে লুকিয়ে কাঁদছি। কেউ দেখতে পেলে কেলেংকারি হয়ে যাবে। ছেলেদের তো কাঁদতে নিষেধ।

হঠাৎ মনে হল কেউ আমার বাম পা-টা ধরে টানছে। মুখ তুলে তাকালাম। একটা পিচ্চি, বয়স ৩ নাকি ৪ ঠিক ঠাহর করা যাচ্ছে না। এই শীতের ভিতরেও পরনে শুধু একটা হাফপ্যান্ট। হাত দিয়ে ফুচকাওয়ালাকে দেখাচ্ছে। ফুচকা খেতে চায়।
আমি আর পিচ্চিটা একসাথে বসে ফুচকা খাচ্ছি। ব্যাপক খুশি দেখাচ্ছে তাকে, ছোট-ছোট দাঁত বের করে হাসছে। হাসিতে কোন কৃত্রিমতা নেই। এত সুন্দর করে আমি কখনো কাউকে হাসতে দেখিনি। ওয়েস্টিনে খাইয়েও ঐশীর মুখে এরকম হাসি কোনদিন দেখতে পারেনি।
এতক্ষণে বুঝে গেছি পিচ্চিটা কথা বলতে পারে না। কার বাচ্চা জানার ছোটখাটো চেষ্টাও চালিয়েছি, তবে সফল হইনি। পিচ্চিটাকে কোলে তুলে নিয়েছি। এখন আমার অনেক কাজ। পিচ্চির জন্য জামা-কাপড় কিনতে হবে। কাল বছরের প্রথম দিন যে!

রবিবার, ৬ আগস্ট, ২০১৭

ঘুরে আসুন ময়মনসিংহ | ময়মনসিংহের দর্শনীয় স্থান সমূহ

প্রকৃতি প্রেমিরা একদিনের জন্য খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারেন নদ ব্রহ্মপুত্র আর ময়মনসিংহ শহর থেকে।
রুটঃঢাকা মহাখালি-ময়মনসিংহ
সহজ ও সুবিধা জনক বাহনঃ এনা পরিবহন। এনার গাড়িগুলো ১০ মিনিট পরপর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় নিয়মিত। ভাড়া ২২০ টাকা নেবে। এছাড়া ট্রেনে যাবারও ব্যাবস্থা রয়েছে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ( যমুনা একপ্রেস, তিস্তা একপ্রেস, ব্রহ্মপুত্র একপ্রেস, অগ্নিবিণা, বিজয়) আন্তঃনগর ও বেশ কটি কমিউটার ট্রেন ছেড়ে যায়। ভাড়া ৪০-১৪০ টাকা।
ময়মনসিংহ পৌছে গেলে অটো রিক্সা অথবা রিক্সা করে চলে যেতে পারেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। এখানকার চির সবুজ প্রকৃতি পরিবেশকে যেন অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রকৃতি কোনো ভাবেই আপনাকে নিরাশ হবার সুযোগ দেবে না। একে একে বিশ্ববিদ্যালয় চারপাস আর মিউজিয়াম গুলো ঘুরে ফেলতে পারেন। আম বাগান এর রাস্তা টা মিস করবেন না কোন ভাবেই।
ভার্সিটি এরিয়াতে জব্বারের মোড়ে খাবার দাবারের বেশ কিছু হোটেল আছে। দুপুরে এখানেই খেয়ে নিতে পারেন। ১০০ টাকার মধ্যেই হয়ে যাবে। খাওয়া শেষে পাসেই হেঁটে ভার্সিটি স্টেশনের প্লাটফর্মে বসে সবুজের মাঝে জিড়িয়ে নিতে পাড়েন।
দুপুর ২টার পরে ভার্সিটি বোটাক্যাল গার্ডেন খোলে। এরপর সোঁজা চলে আসবেন বোটানিক্যাল গার্ডেনে। নদের পাড় ঘেষে গড়ে ওঠা যায়গাটার পুরোটাই প্রবীন ও নবীন বৃক্ষে ভড়া। এছাড়াও আছে পেনিস অফ ভাউ নামে একটি প্রাচীন স্থাপনা। যার উচ্চতা ধারনা করে সঠিক বলা যায়। ১২ আথবা ১৫ তলা সমান হবে মনে হয় অথবা এরো বেশি। তবে এর ওপ্র থেকে দেখা যায় শহরের প্রায় একাংস। তবে এখানে উঠতে পারাটা একটা ব্যাপার বটে। তাছাড়াও অনুমোতি পাওয়াটাও ফ্যাক্ট।
এরপরে এখান থেকে বেরিয়ে পাসেই ঘাটে গিয়ে নৌকা নিয়ে বেশ কিছু সময় কাটাতে পারেন নদের বুকে। অথবা রিক্সা নিয়ে চলে আসতে পারেন ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী পার্কএ। এখানে এসেও পালতোলা নোকোতে করে নৌকা বিলাসের আনন্দ নিতে পারেন। তবে এখানে ভার্সিটির তুলনায় কোলাহল একটু বেশি থাকে বিকেলের দিকে। আর নৌকা ভাড়াটাও একটু বেশি। ১ ঘন্টার জন্য ১২০-১৫০ টাকা।। পাশেই আছে শীল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সংগ্রহশালা। এখানে গিয়ে স্যারের চিত্রকর্মগুলো দেখে মুগ্ধ না হওয়ে পারবেন না।
এছাড়াও ময়মনসিংহতে যে সব দর্শনীয় স্থানসমূহ রয়েছে সেগুলো হলঃ
শশী লজ
বিপিন পার্ক
ময়মনসিংহ বড় মসজিদ
সাহেব পার্ক
ভাটি কাশর মসজিদ
কালী মন্দির
দূর্গা মন্দির
শিব মন্দির
লোকনাথের আশ্রম
মাসকান্দা পাদ্রি মিশন।
ঘুরতে ঘুরতে সন্ধ্যে হয়ে যাবে। এরপর আবারো চলে আসুন মাসকান্দা বাসস্টেন্ডে। তারপর ফিরতি বাসে করে ঢাকা পথে ......... (Collected)

বুধবার, ২ আগস্ট, ২০১৭

Nirjhar - নির্ঝর । A Documentary on 'Nirjhar Residential Area' Most Beautiful Place In Dhaka.

Nirjhar - নির্ঝর । A Documentary on 'Nirjhar Residential Area' 
Most Beautiful Place In Dhaka.
নির্ঝর আবাসিক এলাকা ঢাকা ক্যন্টনমেন্ট এর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সুশোভিত এলাকা । রয়েছে সুবিশাল লেক, পাবলিক ও ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল , বহুতল আবাসিক ভবন,রেস্টুরেন্ট/ক্যাফে, আকর্ষনীয় ডাবল ডেকার ব্রিজ। তবে এখানে প্রবেশাধিকার সামরিক বাহীনিদের দ্বারা সংরক্ষিত। 
_________________________
Nirjhar Residential Area, Dhaka Cantonment
Beautiful area located at the heart of the Dhaka Cantonment.There is a vast lake, Public and English medium school, multi storied residential buildings, restaurant / café, attractive double-Decker bridge. However, access here is protected by Military.
#nirjhar #dhaka #dhakacantonment #nirjharresidentialarea#nirjharpublischool #tribeni
https://youtu.be/sHPqoZOfWeE

বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

কবির মৃত্যু চাই

কবির মৃত্যু চাই

বুড়ো কবি আর নেই রসদ
শত অশ্লীল আর গোবরে পচা
সহজ আর সাবলীল
ধীর কিন্তু কঠিন কথা বলেছে সহজেই,
চরিত্রহীনের মত নিজ মননেরে
দিয়েছে সর্বোৎকৃষ্ট প্রশ্রয়াসন।

নিজেকে জাহির করে সম্মুক্ষে
জনতার মাঝে উচ্চস্বরে বলে
সে কবি তাহার কথাই সব
শত কত বিদ্রোহী তবু নিরব।

যে কবির জন্য
শত নারীর উন্মত্ত আবেগ
যার আবৃতি এনেছিল
প্রেমিকার চোখে জল
সেই কবির মৃত্যু চাই।

কবি প্রেমিকা  আজ মরে গেছে
কান্নার রোল থেমে গেছে
এসেছে নতুন কবি
পুরান আর বুড়ো কবিদের
আজ বড্ড নোংরা লাগে।

তবু বুড়ো কবিরা ব্লগ খুলে
পড়ে তাহার পুরানো কবিতা
যাতে প্রচ্ছদপট
তাহার প্রেমিকার হাত।

_____
মোহাম্মদ শাকিরুল ইসলাম
২৪.০২.২০১৬

সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬

তৃষ্ণা


ছেলেটি  খুজেনি মেয়েটির অধরে গভীরতা
তলিয়ে গিয়ে তার চুম্বনে তৃষ্ণার্ত আর উন্মুখ
লোকচক্ষুর অন্তরালে শুধুই দুইয়ে হয় এক
অনুভূতি যেখানে নিথর চেয়ে থাকা
আর দৃড় বিশ্বাস নিয়ে আঁকড়ে ধরা।

মেয়েটির ধমনীর সঞ্চানে কাঁপছে ছেলেটিও
শুধুই আমৃতু চুম্বনেই যেন সুখের পরম আস্বাদন
যেন এই মাত্র যুদ্ধবিমান উড়ে গেল
সাইরেন বাজিয়ে গেল সুনামির পুর্ব সংকেত
আর এম্বুলেন্স এর লাল বাতির এইদিক সেইদিক ঘুর্ণন।

ট্রাফিক জ্যামে চৌরাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে আছে
চুম্বনরত বালক বালিকা, আজ উন্মাদ
পৃথিবীরর সকল সমুদ্র সম যেন তাহাদের তৃষ্ণা।

মিটেনি মিটবে না শুধুই প্লাবিত হয়ে যাবে কেউ
আর শুকিয়ে যাবে কারো অধরের ঢেউ
তবু তৃষ্ণা রয়ে যায় তৃষ্ণা বয়ে যায়।

____

তৃষ্ণা
-- মোহাম্মদ  শাকিরুল ইসলাম
০২ ফাল্গুন
চৌদ্দ /দুই/ষোল 

বুধবার, ৬ জানুয়ারী, ২০১৬

তুমি চলে যাচ্ছো

 তুমি চলে যাচ্ছো !!
***************নির্মলেন্দু গুণ !

তুমি চলে যাচ্ছো, নদীতে কল্লোল তুলে লঞ্চ ছাড়ছে,
কালো ধোঁয়ার ধস ধস আওয়াজের ফাঁকে ফাঁকে
তোমার ক্লান্ত অপস্রিয়মাণ মুখশ্রী,--সেই কবে থেকে
তোমার চলে যাওয়ার দিকে থাকিয়ে রয়েছি।
তুমি চলে যাচ্ছো, তোমার চলে যাওয়া কিছুতেই
শেষ হচ্ছেনা, সেই কবে থেকে তুমি যাচ্ছো, তবু
শেষ হচ্ছেনা, শেষ হচ্ছেনা।

বাতাসের সঙ্গে কথা বলে, বৃষ্টির সঙ্গে কথা বলে
ধলেশ্বরীর দিকে চোখ ফেরাতেই তোমাকে আবার দেখলুম;
আবার নতুন করে তোমার চলে যাওয়ার শুরু।
তুমি চলে যাচ্ছো, নদীতে কল্লোল তুলে লঞ্চ ছাড়ছে,
কালো ধোঁয়ার ফাঁকে ফাঁকে তোমার ক্লান্ত অপস্রিয়মাণ
মুখশ্রী, যেন আবার সেই প্রথমবারের মতো চলে যাওয়া।
তুমি চলে যাচ্ছো, আমি দুই চোখে তোমার চলে যাওয়ার
দিকে তাকিয়ে রয়েছি, তাকিয়ে রয়েছি।

তুমি চলে যাচ্ছো, নদীতে কান্নার কল্লোল,
তুমি চলে যাচ্ছো, বাতাসে মৃত্যুর গন্ধ,
তুমি চলে যাচ্ছো, চৈতন্যে অস্থির দোলা, লঞ্চ ছাড়ছে,
টারবাইনের বিদ্যুৎগতি ঝড় তুলছে প্রাণের বৈঠায়।
কালো ধোঁয়ার দূরত্ব চিরে চিরে ভেসে উঠছে তোমার
অপস্রিয়মাণ মুখশ্রী, তুমি ডুবতে ডুবতে ভেসে উঠছো।
তোমার চলে যাওয়া কিছুতেই শেষ হচ্ছেনা,
তিন হাজার দিন ধরে তুমি যাচ্ছো, যাচ্ছো আর যাচ্ছো।

তুমি চলে যাচ্ছো, আকাশ ভেঙে পড়ছে তরঙ্গিত
নদীর জোৎস্নায়, কালো রাজহংসের মতো তোমার নৌকো
কাশবনের বুক চিরে চিরে আখক্ষেতের পাশ দিয়ে
যাচ্ছে অজানা ভুবনের ডাকে। তুমি চলে যাচ্ছো,
আকাশ ভেঙে পড়ছে আকাশের মতো।
হে তরঙ্গ, হে সর্বগ্রাসী নদী, হে নিষ্ঠুর কালো নৌকা,
তোমরা মাথায় তুলে যাকে নিয়ে যাচ্ছো
সে আমার কিছুই ছিল না, তবু কেন সন্ধ্যার আকাশ
এরকম ভেঙে পড়লো নদীর জোৎস্নায়?
ভেঙে পড়লো জলের অতলে? তুমি চলে যাচ্ছো বলে?

তুমি চলে যাচ্ছো, ল্যাম্পপোস্ট থেকে খসে পড়ছে বাল্ব,
সমস্ত শহর জুড়ে নেমে আসছে মাটির নিচের গাঢ় তমাল তমসা।
যেন কোনো বিজ্ঞ-জাদুকর কালো স্কার্ফ দিয়ে এ শহর
দিয়েছে মুড়িয়ে। দু'একটি বিষণ্ণ ঝিঁঝিঁ ছাড়া আর কোনো গান নেই,
শব্দ নেই, জীবনের শিল্প নেই, নেই কোনো প্রাণের সঞ্চার।
এ শহর অন্ধ করে তুমি চলে যাচ্ছো অন্য এক দূরের নগরে,
আমি সেই নগরীর কাল্পনিক কিছু আলো চোখে মেখে নিয়ে
তোমার গন্তব্যের দিকে, নীলিমায় তাকিয়ে রয়েছি।
তুমি চলে যাচ্ছো, তোমার বিদায়ী চোখে, চশমায় নুহের প্লাবন।
তুমি চলে যাচ্ছো, বিউগলে বিষণ্ণ সুর ঝড় তুলছে
অন্তর্গত অশোক কাননে। তুমি চলে যাচ্ছো, তোমার পশ্চাতে
এক রিক্ত, নিঃস্ব মৃতের নগরী পড়ে আছে।

অনন্ত অস্থির চোখে বেদনার মেঘ জমে আছে,
তোমার মুখের দিকে তাকাতে পারি না।
তোমাকে দেখার নামে তোমার চতুর্দিকে পরিপার্শ্ব দেখি,
বিমানবন্দরে বৃষ্টি, দু'চোখ জলের কাছে ছুটে যেতে চায়,
তোমার চোখের দিকে তাকাতে পারি না।

তুমি চলে যাচ্ছো, আমার কবিতাগুলো শরবিদ্ধ
আহত সিংহের ক্ষোভ বুকে নিয়ে প'ড়ে আছে একা।
তুমি চলে যাচ্ছো, কতগুলো শব্দের চোখে জল।

মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

অভিমানী ভালবাসা


- শোনো , একটু অপেক্ষায় থাকো আমি আসছি .....

- কই যাও তুমি??

- বৃষ্টিবিলাস করতে .....

- জানিতো তুমি আস্ত পাগলী। তুমিতো আমাকে অপেক্ষাতে রেখে চলে যাবা। শেষ পর্যন্ত আমাকেই ফোনটা রেখে দিতে হবে .....

- হিহিহিহিহিহি ......

- এই , এমন ছাগলা হাসি হেসো না .... তোমাকে বাজে দেখায় ....

- হুহ ... কি বললা তুমি??? থাকো তুমি। আমি আর আসমু না ... জীবনেও আসমু না। ফোন দিলেও ধরমু না। হুহ পচা ... হারামি .......

- আরে .... ( টুট ... টুট .... টুট .....)

ফোনটা কেটেই দিলো ওপাশের জন। এপাশের জন হাসতে হাসতে আবার ফোন দেয়। ওপাশে একটা সুকন্ঠী নারী কন্ঠ শোনা যাচ্ছে ..... " এই মুহুর্তে সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না .." এপাশের জন অর্থাৎ অভ্র ভাবে , " পাগলীটা তাইলে প্রচন্ড ক্ষেপছে তাই ফোনটা বন্ধ করে রেখেছে। এবারও সরি টরি বলে রাগ ভাঙাতে হবে। এবার রাগ ভাঙাবো পাগলীটার বাসার সামনে ....." এরকম ভাবতে ভাবতে অভ্র রেডি হয়ে ভার্সিটি গেলো।

অতঃপর অনেক বছর পর অভ্র এসে দাঁড়িয়েছে আদ্রিতার কবরের সামনে। সাথে মৃন্ময়ী .... মৃন্ময়ী অভ্রের একমাত্র মেয়ে। নিজের মেয়ে বললে ভুল হবে। মৃন্ময়ী হলো অভ্রের নিজের মেয়ের থেকেও বড় কিছু। এই মৃন্ময়ীর মাঝে সে আবার আদ্রিতাকে পেয়েছিলো। আরে , আদ্রিতার কথা বলা হলো না। এই আদ্রিতা হলো অভ্রের পাগলীটা , অভিমানী প্রেয়সী। যে চলে গেছে নাম না জানা জায়গায়। তাকে চাইলেও ফেরানো যাবে না। বড্ড অভিমানী।

সেদিন ভার্সিটি শেষে আদ্রিতাকে বারবার ফোন দিতে থাকলো অভ্র। কিন্তু বারবার সেই এক কথাই "সংযোগ প্রদান করা সম্ভব নয়"| তারপর অভ্র ঠিক করে আদ্রিতার বাসায় যাবে। মিরপুরে "পথের শেষে " নিবাসে গিয়ে দেখে বাড়ির গেইট এ প্রচন্ড রকম ভিড়।অভ্র কিছু ভাবতে পারছে না। ভীড় ঠেলে ভেতরে ঢোকার সময় মানুষ জন বলতে থাকলো "ইশ ... আদি মেয়েটা কত ভালো ছিলো ..." "ছাদে পা পিছলে ছয় তলা থেকে পড়ে গেলো মেয়েটা ...." এসব শুনতে শুনতে আদ্রিতার ঘরের সামনে গিয়ে দেখে একটি মায়াবী মুখ টা ঘুমিয়ে আছে..."কি সুন্দর করেই না ঘুমাচ্ছে আমার পাগলীটা ... আদি তুমি ঘুমাও তোমার ঘুম ভাঙাবো না ..পরে আসবো ...." এসব বলতে বলতে কখন যে অভ্রের মাথা ঝিম করতে লাগলো বুঝেনাই অভ্র। একবারের জন্যও কাঁদে নি। একসময় কন্ট্রোল করতে না পেরে  নিচে নেমে পড়লো। বাড়ি থেকে বের হয়ে অন্যমনস্ক ভাবে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ করে ধাক্কা খেলো একটা পিচ্চি মেয়ের সাথে।অভ্র মেয়েটার দিকে একমনে তাকিয়ে থাকলো। মেয়েটা কাঁদতে শুরু অভ্র তাকে থামিয়ে বললো ,
- কিরে , ব্যাথা পাস নি তো???

- না ( কান্না মাখা কন্ঠে)

- তোর বাবা মা কই???

- নাই ....

- তাইলে কার সাথে থাকিস???

- দূর সম্পর্কের চাচির সাথে। আমাকে খালি মারে। এই জন্যই পালিয়ে এসেছি। এই দেখো দাগ ...
অভ্র মেয়েটার হাতের দাগের দিকে তাকিয়ে দেখলো আর সাথে সাথে মনটা কেমন করে উঠলো। আর অভ্রের চোখ যেনো আদ্রিতার হাত ই দেখলো। আনমনে অভ্র হঠাত্‍ বলে উঠলো , "পিচ্চি ,আমার সাথে যাবি???"

অভ্র মেয়েটাকে নিয়ে এই জনবহুল নগরীতে অগণিত মানুষের ভিড়ের মাঝে হেঁটে যাচ্ছে। দূর থেকে মনে হচ্ছে এ যেন অভ্র - মৃন্ময়ী নয় বরং হেঁটে যাচ্ছে অভ্র -আদ্রিতা ......... আর তাদের বহমান ভালবাসা।

Nilanjona Neela
22.06.2015