- আব্বু, প্যাকেটটার ভিতর কি আছে বল
না ! অনুনয় করে বলল তমাল ।
- উহু, বলা যাবে না । রাত ১২ টায় কেক
কেটে তারপর প্যাকেটটা যখন তোর
হাতে দিব তখন তুই নিজে খুলে দেখবি ।
তারেক সাহেব বললেন ।
- কেন? এখন বললে কি হবে ?
- এখন বলে দিলে মজাটা থাকবে না ।
আজকে তমালের পঞ্চম জন্মবার্ষিকী ।
প্রতিবারের মত এইবারও পরিবারের চারজন
মিলে জন্মদিন পালন করা হবে । তমালরা দুই
ভাই । তার বড় ভাই তুহিনের বয়স ১১ বছর ।
রাত ১১ টা ৫৯ মিনিট :
জন্মদিনের
কেকে পাঁচটি মোমবাতি জ্বালানো হয়েছে ।
সবাই অপেক্ষা করছে ১২ টা বাজার জন্য ।
১২ টা বাজার সাথে সাথেই তমাল তার
মায়ের হাতে হাত রেখে কেক কাটল । তার
বাবা - ভাই হাততালি দিল আর উইশ
করলো । তমাল তার বাবা – মা – ভাই
সবাইকে কেক মুখে তুলে দিল । কেক খাওয়ার
পর্ব শেষ হতেই তমাল আলমারির
দিকে এগিয়ে গেল যেখানে তার জন্য
আনা গিফটের প্যাকেটটা রাখা হয়েছে । এই
সময় বাইরে চিৎকার – চেঁচামিচির শব্দ
শুনে কৌতূহলবশত
জানালা দিয়ে বাইরে তাকাল তমাল ।
সাথে সাথে একটা বুলেট তমালের মাথায়
লাগলো । মাটিতে লুটিয়ে পড়লো তমাল ।
তার বাবা তার জন্য কি গিফট এনেছিল
সেটা অজানাই থেকে গেল তার । চোখের
সামনে এই দৃশ্য দেখে সবাই চিৎকার
করে উঠলো । তারেক সাহেব জানালার
কাছে গিয়ে একটু উঁকি দিয়ে দেখলেন
কয়েকজন
পাকিস্তানী মিলিটারি দৌড়ে বিল্ডিংয়ের
ভিতর ঢুকছে । তার বড় ছেলেকে বাঁচানোর
একটা মাত্র উপায় তার মাথায় আসল ।
তিনি দৌড়ে গিয়ে তুহিনকে ধরে দেয়ালের
দিকে ছুঁড়ে মারলেন । মাথায় প্রচণ্ড আঘাত
পেয়ে তুহিন জ্ঞান হারাল । বেহুঁশ
তুহিনকে টেনে তমালের মৃতদেহের
কাছে ফেলে রাখলেন । কয়েক সেকেন্ড
পরেই বুটের লাথিতে বাসার সদর
দরজা খুলে গেল ।
ধীরে ধীরে চোখ মেলে তাকাল তুহিন ।
মাথায় প্রচণ্ড ব্যথার
সাথে একটা ঘোলাটে ভাব কাজ করছে।
চারপাশে তাকিয়ে বুঝতে পারলো না সে বাস্তবে আছে নাকি কোন
ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখছে । তার
বাবা মা রক্তাক্ত অবস্থায়
মেঝেতে পড়ে আছে । সে পড়ে আছে তার
ছোট ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশের পাশে ।
হতবাক হয়ে সে লাশগুলোর
দিকে তাকিয়ে আছে ।
কীভাবে কি হয়ে গেল কিছুই
বুঝতে পারলো না সে । শুধু বুঝতে পারলো এই
পৃথিবীতে সে পুরোপুরি একা হয়ে গেছে ।
প্রচণ্ড কষ্টে তার বুক দুমড়ে মুষড়ে যাচ্ছে ।
কিন্তু তার চোখ দিয়ে এক ফোঁটা পানিও
বের হচ্ছে না । মাত্রাতিরিক্ত
শোকে সে পাথর হয়ে গেছে ।
উঠে দাঁড়িয়ে টলতে টলতে গেট
খুলে বাইরে পা দিল । পাশের বাসার
দরজা হাট করে খোলা ।
খোলা দরজা দিয়ে ভিতরের বীভৎস দৃশ্য
দেখা যাচ্ছে । অজানার
উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আগে ঘাড়
ঘুড়িয়ে বাবা – মা – ভাইয়ের লাশের
দিকে তাকাল । তার মাথার
ঘোলাটে ভাবটা কেটে গেছে ।
আপনা আপনি তার হাত মুঠিবদ্ধ হয়ে গেল ।
শোকটা শক্তিতে পরিণত হয়েছে ।
প্রতিশোধের নেশায় তুহিনের
চেহারা ভয়ংকর হিংস্র হয়ে উঠেছে । ১১
বছরের একটা ছেলের চেহারা এতটা ভয়ংকর
রূপ ধারণ করতে পারে না দেখলে কেউ
বিশ্বাস করবে না । কি ভেবে আবার ঘরের
ভিতরে ঢুকল তুহিন। তার পড়ার টেবিলের
উপর থেকে কালো রংপেন্সিল
তুলে নিয়ে দেয়ালে সাঁটানো ক্যালেন্ডারের
সামনে গেল । ২৫ মার্চের তারিখটা ভরাট
করলো ।
এমন সময় দুইজন লোক
হাঁপাতে হাঁপাতে রুমে ঢুকল । দুইজনের
মধ্যে একজনের কপাল
বা পাশে কেটে গেছে ।
- পাকিস্তানীরা আবার
এইদিকে আসতে পারে । তাড়াতাড়ি চল ।
যারা বেঁচে আছে তাদের খুঁজে বের
করতে হবে । তুহিনকে বলল একজন ।
- কালকে রাত থেকে কি হচ্ছে একটু
বলবেন ? তুহিন জিজ্ঞেস করলো ।
- কালকে রাতে পশ্চিম
পাকিস্তানীরা আমাদের দেশ আক্রমণ
করে গণহত্যা শুরু করেছে । আক্রমণের পর
কাল রাতেই রেডিওতে স্বাধীনতার
ঘোষণা করা হয়েছে । আমাদের দেশের নাম
এখন বাংলাদেশ ।
- এখন কথা বলে নষ্ট করার মত সময় নেই।
তাড়াতাড়ি চল । অন্যজন বাধা দিয়ে বলল ।
- তিনতলা আর চারতলায় কেউ
বেঁচে আছে কিনা দেখে আসেন । আমি বের
হচ্ছি। তুহিন বলল ।
লোক দুইজনের পায়ের শব্দ
উপরে চলে গেলে টেবিল থেকে লাল আর
সবুজ রংপেন্সিল তুলে নিল তুহিন । ২৬
তারিখের পাশে লাল রংপেন্সিল দিয়ে বড়
করে লিখল " প্রতিশোধ "।
তার পাশে সবুজ রংপেন্সিল দিয়ে লিখল "
শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ " ।
ক্যালেন্ডারটা ছিঁড়ে পকেটে ভরে নিয়ে ঘর
থেকে বের হয়ে আসল তুহিন।
বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০১৪
সে পড়ে আছে তার ছোট ভাইয়ের রক্তাক্ত লাশের পাশে
[লাখো কন্ঠে সোনার বাংলা ]
___ ইভেন্টে অনেক ভুগান্তির মাঝেও প্রায়
৩ লক্ষ লোক অংশ নিয়েছে।
সবাইকে অনেক অভিনন্দন।
___ জুতা বিসর্জনের
মাধ্যমে আমরা গড়েছি গিনেজ বুক অফ
ওয়াল্ড রেকর্ড। ___ যারা সেন্ডেল
পায়ে গিয়াছে তাদের জন্যা সত্যি দুঃখ
হচ্ছে।
______ আমার জানা মতে পদ তলে পৃষ্ঠ
হয়ে ১ নং গেটে ১জন মহিলা মারা গেছেন
______হাজার হাজার লোকের
জুতা দেখা যাচ্ছে রাস্তায়।
___ কিছু
ছেলেরা বস্তা বস্তা জুতা কুড়াচ্ছে।
____ জাতীয় সঙীত
শেষে পতাকা নাড়ানো অনেক ভালো ছিল
( কিন্তু ১ মিনিট পর পানির খালি বোতল
ছোড়াছুড়ি আসলে কাম্য ছিল না )
# এগিয়ে যাও প্রিয় বাংলাদেশ
শনিবার, ২২ মার্চ, ২০১৪
HSC 2014 planning
HSC ২০১৪, পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৩ এপ্রিল।
মনে হয় না এখনো তেমন কেও
ফেসবুকে আছে, তবুও
একটা দিকনির্দেশনামূলক লেখা লিখলাম,
যদি তাতে অন্তত একজনেরও উপকার হয়
লেখা সার্থক হবে...
বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষায় লেখা বেশি। তার
উপর প্রথম পরীক্ষা বলে দেখবে একটু পরপর
এইটায় সাইন করো, এইটায় নাম লিখো,
এইটায় রোল লিখো এরকম অনেক কাগজ
আসবে যা তোমার পরীক্ষা চলাকালীনই পূরণ
করতে হবে। তাই বাসা থেকেই প্ল্যান
করে বের হও প্রতিটা ১০ নম্বরের প্রশ্ন
কতটুকু লিখবে। প্রথম প্রশ্ন ইয়া বড়
করে লিখে লাস্টের প্রশ্ন খুব ছোট
করে ফেলার চেয়ে গড়ে সবগুলা সমান
পরিমানে লেখার চেষ্টা করো। আমার যতটুক
মনে পড়ে আমি আমার প্রতিটা বড় প্রশ্ন ৪
পাতা(প্রতি পাতায় ১৫-১৬ লাইন)
লিখেছিলাম, ফলে আমার সময় নিয়েও
ভেজালে পড়তে হয় নি।
তাই তোমাদের কাজ সময় মেইন্টেইন করা। ১
নম্বরের প্রশ্নের উত্তর এক লাইনেই লিখবে,
তাছাড়া ২,৩ ও ৪ এর প্রশ্নে অহেতুক
কথা লিখবে না। মনে রেখো এটা সৃজনশীল।
"খাতার ভর যত বেশি নাম্বার তত বেশি" এই
তত্ত্ব এখানে কাজ করে না। যা চেয়েছে,
তাইই সহজ প্রাঞ্জল ভাষায়
গুছিয়ে লিখলে পূর্ন মার্ক পাবেই পাবে...
গ্যারান্টি...
অব্জেক্টিভ প্রশ্ন পত্র দেখে ভালোমত
সেটকোড ফিলাপ করবে। দেখো, "একটি ভুল,
সারাজীবনের কান্না" । তাই OMR পূরন
করতে নিজের মনোযোগের পুরোটা দিবে।
আশেপাশের কারো সাথে তখন ভুলেও
কথা বলবে না। আবারো বলি, "একটি ভুল,
সারাজীবনের কান্না" ...
বাংলা ২য় পত্র সম্পর্কে বেশি কিছু বলার
নেই। ব্যাকরন ৩০ এ ৩০ সঠিক করার
চেষ্টা করবে, মাথায় রাখবা, ৩০ এ তুমি ২৯
পেয়েছো তো ৮০ তে ৭৯ পেয়ে গেলে।
বাংলা ২য় পত্রতে সাধারনত যে ধরনের
মার্কিং আমাদের শিক্ষকেরা করেন
তাতে ৮০+ তোলা খুব কষ্ট।
আরেকটা ব্যাপার রচনা নির্বাচন করা।
"দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান", "স্বদেশপ্রেম",
"পরিবেশ দূষন" - এধরনের মেইনস্ট্রিম
রচনাগুলো আন্সার না করার সর্বোচ্চ
চেষ্টা করবে। আমাদের সময় যতটুকু মনে পড়ে,
বিজ্ঞান আর পোশাক শিল্প এসেছিলো।
তো আমার হাতের লেখা খুব স্লো। তাই
বেশি পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা আমি লিখতে পারতাম
না। তাই ঠিক করলাম পোশাকশিল্প দিবো।
কারন এতে অনেক তথ্য দেয়া যায়।
তাছাড়া এটা মেইনস্ট্রিম রচনা না। মাত্র ৯
পৃষ্ঠার মত লিখেছিলাম। আমি জানি,
আমি যে পরিমান তথ্য
দিয়েছি তাতে এতে আমি অবশ্যই ২০ এ ১৫+
পেয়েছি। বাংলা রচনায় ১৫+ কিন্তু খুব
ভালো নাম্বার...
তাই তোমরা খুব বেশি বিপদে না পড়লে এসব
কমন রচনা বাদ দিয়ে তথ্য খুব
বেশি দেয়া যায় এরকম রচনা দেখে যাবে।
পয়েন্ট খুব বেশি দিবে। আর
যারা ঢাকা বোর্ডের তাদের একটু
"পোশাকশিল্প" রচনাটা দেখে যেতে বলছি,
এসে পড়তে পারে কিন্তু ইংরেজি ১ম ও ২য়
পত্র নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই। ১ম
পত্রে তোমরা রিএরেঞ্জটা ঠিকমত
লিখবা আর আগের পাক্কা নাম্বার
যেগুলাতে আসে , মানে ১ থেকে ১০,
সেগুলা সঠিক করবা। তোমার A+ কেও
আটকাতে পারবে না। ২য় পত্রেও একই কথা,
ব্যাকরন ৪০ কারেক্ট করতেই হবে, নাহয়
বাংলার মতই A+ মিস হয়ে যেতে পারে।
তোমাদের রুটিন দেখলাম। খুব ভাল রুটিন
আমার মতে(অন্তত আমাদের বারের
চেয়ে ভালো -_-) । বিজ্ঞান বিভাগের
একটা ব্যাপার দেখলাম, রসায়ন ১ম পত্রের
আগে ১৬-১৭ দিন বন্ধ!!! তো আমার মতে,
এখন রসায়ন ধরার দরকারই নেই।
বরং ফিজিক্স পড়তে পারো যার আগে মাত্র
১ দিন বন্ধ! তাই এখনই ভালোভাবে রিভাইস
দিয়ে রাখো। আর যেহেতু সৃজনশীল, তাই
তোমার পরীক্ষার আগের রাতের
প্রিপারেশনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ন
সারা বছর তুমি কিরকম পড়েছো। শেষ
মুহুর্তে এসে কঠিন কিছু
নিয়ে বসে থেকো না।
যা আগে পড়েছো তাইই বারবার রিভাইস
দেও। বোর্ড পরীক্ষার জন্য তপন স্যারের
বইয়ের উপর কোন বই নেই। তাই অন্য বই
গুতাগুতি এখন আপাতত খেমা দাও। অনেকের
কাছে এডমিশান কোচিং এর বইগুলা আছে।
সাবধান!! ঐগুলা ছুঁয়েও দেখবে না, সাবধান
বলছি...
তোমরা পারবে, অতিরিক্ত
কথা না বলে যাস্ট যেটা চায় সেটাই শুধু
লিখবে, ক্যালকুলেটর সাধারনত সবই
নেয়া যায়, তারপরও ES plus series নিও না।
কোন কোন কলেজ
দুষ্টামি করে বসতে পারে!!
রসায়নের আগে ১৬-১৭ দিন বন্ধ, কিভাবে ঐ
বন্ধে পড়বে এটা তোমাদের ব্যাপার আমরাও
আমাদের সময় এরকম বিশাল এক বন্ধ
পেয়েছিলাম, তখন দেখেছিলাম কেও কেও
কক্সবাজার পর্যন্ত ঘুরতে গেছে, শুধু এই
বিষয়টা খেয়াল রেখো, পড়ালেখায়
যে মোমেন্টাম চলে আসছে, সেটা যেন এই
বন্ধের কারনে নষ্ট না হয়।
জীববিজ্ঞান, ভালোভাবে ভেতরটা পড়ো,
এখন অবশ্য বেশি সময় নেই। তাই তোমাদের
কলেজে যেভাবে পড়িয়েছে সেই দিক
অনুসরন করো।
গণিতের আগেও তেমন বন্ধ নেই,
তবে যা আছে যথেষ্ট। গণিত দেখে অনেক
ভয় পাও, আয়হায়, এত গুলা প্রশ্ন আন্সার
করতে হবে?? বিশ্বাস করো, প্রশ্ন
এতগুলা হলেও তোমাদের আন্সার
করতে সর্বোচ্চ ২.৩০ ঘন্টা লাগবে। কারন
প্রশ্ন কখনোই এত কঠিন হয় না। আর সময়
হাতে থাকে অনেক।
এখন প্রতিটা পরীক্ষার জন্যই কমন কথা,
যেটা সবচে ভালো পারো সেটা দিয়েই শুরু
করবে। না পারা কোন কিছু দিয়ে শুরু
করবে না। মাথায় রাখো, এইসব
পরীক্ষা পুরোটাই মেন্টাল গেইম।
ক্রিকেটের মত, স্টার্টিং ভাল
হলে কনফিডেন্স আসে, যার
ফলে পুরো পরীক্ষাই ভাল হয়।
স্টার্টিং খারাপ হলে পরের সহজ জিনিষেও
তুমি ভুল করে ফেলতে পারো।
তাই প্রশ্ন পেয়েই ঠিক
করে ফেলবে কোনটা তুমি ভাল পারো।
সেটা দিয়েই শুরু করে ফেলবে...
গুরুত্বপূর্ন কিছু তথ্যঃ
*** খাতায় লাল/সবুজ ছাড়া যেকোন
কালারের কলম ব্যবহার করতে পারবে ***
***প্রতিদিন তোমাকে একটি স্বাক্ষর
পত্রে স্বাক্ষর দিতে হবে,
মনে করে দিবে কিন্তু,
নাহলে পরীক্ষা দেয়া সত্ত্বেও
তোমাকে অনুপস্থিত দেখানো হবে***
***প্রতিদিন এডমিট কার্ড ও রেজিস্ট্রেশন
কার্ড সাথে নিয়ে যাবে***
***নকল করার চিন্তা মাথাও এনো না, প্রশ্ন
এত সহজ হবে যে নকল করার দরকারই
পড়বে না, Trust me***
শেষ কথাঃ তোমাদের সৃজনশীল
পদ্ধতিতে পরীক্ষা, তার উপর পুরাতন
সিলেবাসের শেষ ব্যাচ তোমরা, তাই
তোমাদের প্রশ্ন আহামরি কঠিন হবে না।
তাই ভয় পাবার কিছু নেই। একটা গুরুত্বপূর্ন
কথা, প্রতিটা পরীক্ষার আগেরদিন রাতেই
একটা গুজব উঠবে, প্রশ্ন আউট হয়েছে,
দয়া করে কান দিও না। তুমি যা পড়েছো তার
উপর আস্থা রাখো।
জয় তোমাদের হবেই...
ক্রেডিট: পাঠ্যবইয়ে নেই
পড়াশোনায় অমনোযোগী? হতাশাকে গিলে ফেলুন।
সামনে পরীক্ষা। আপনি কি আপনার
পড়াশোনা নিয়ে খুব দুশ্চিন্তাগ্রস্ত?
কোনভাবেই মনোযোগ দিতে পারছেন না।
তাহলে কি করবেন? সবকিছু
ছেড়ে পালিয়ে যাবেন? নাকি পড়াশোনাই
বাদ দিয়ে দিবেন? বুঝতে পারছি- এই সকল
চিন্তা-ভাবনা নিয়ে খুবি হতাশাগ্রস্থ
এবং এলোমেলো হয়ে আছেন।
হয়তো আপনি পড়তে বসছেন সেই মুহূর্তেই
আপনার চিন্তাধারা অন্য কোথাও
ঘুরতে গেলো। বেশিরভাগ সময় লক্ষ্য
করে দেখবেন পড়ার
সময়টুকুতে কতো আজেবাজে চিন্তা মাথায়
ঘুরোঘুরি করে।
কিছু সাধারণ
ব্যাপারগুলো বেশি ঘটে থাকে। যেমন:
কোনো ফুটবল ম্যাচ অথবা ক্রিকেটও
হতে পারে সেটা নিয়ে আপনার ভাবনা-
চিন্তার শেষ নেই। আপনার
প্রেমিকা বা প্রেমিকের সাথে শেষ
কি কথা হলো তাও মাথায় আসে। আপনার
পরীক্ষার পর কি করবেন তা নিয়েও আপনার
উদ্দীপনার কমতি নেই। ১৩ হইতে ১৯ বছরের
যারা আছেন তাদেরকে আমরা টীনস
( Teens ) বলে জানি। এদের
মধ্যে একটা বিষয়
মহামারী রুপে দেখা যায় যৌনতা ( Sexuality)
যার ফলপ্রসূতে অনেক
অপকর্মে জড়িয়ে নেয় নিজেকে।
এছাড়া মাদকের ব্যাপারটা তো থাকছেই।
যাইহোক, পড়াশোনায়
ভালো হতে হলে আপনাকে অবশ্যই
মনোযোগী হতে হবে এইটাই আপানার জন্য
বিরাট চ্যালেঞ্জের। তো কি আর করা, এর
থেকে মুক্তির উপায় কি? মুক্তির উপায়
আপনি নিজে। নিজকে নিয়ন্ত্রণ
করা শিখুন। দেখবেন সবকিছুই খুব
সুন্দরভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।
আসল কথায় আসি, পড়াশোনায়
মনযোগী হয়ার জন্য কিছু ধাপ অনুসরণ
করা যেতে পারে। আমি সেই
বিষয়গুলো নিয়েই সংক্ষিপ্ত
আলোচনা করবো।
সময়সারনী পরিকল্পনা: প্রথমত,
আপনাকে সময় সচেতন হতে হবে।
সময়টাকে খুব গুরুত্ব দিন। মনে রাখবেন
আপনার প্রতিটা দিন, প্রতিটা মুহূর্ত
আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই
পড়াশোনায়ে মনোযোগী হতে হলে অবশ্যই
একটা সময়সারনীর প্রয়োজন থেকেই যায়।
দিন অথবা রাতের মধ্যে কোন
সময়টা আপনি পড়াশোনায় বেস্ত থাকবেন
তা আগে থেকেই ঠিক করে নিন।
কাল যেন আজ হয়: আসলে কাল
কিভাবে আজ
হবে? চিন্তার বিষয়!!!
হ্যাঁ আপনাকে অবশ্যই 'কাল'
কথাটা ভুলে যেতে হবে। 'আজ'
কথাটা সবসময় মাথায় রাখতে হবে।
আপনি পড়াশোনা শুরু করবেন কাল নয়,
আজকে এখনি শুরু করুন।
ভিন্নতার ছোঁয়ায় থাকুন:
একটানা একটা বিষয়
পড়তে আপনি বিরক্ত হতে পারেন। তাই
অন্য বিষয়গুলোর প্রতি নজর দিন। বিষয়টার
সাথে আপনার সময়সীমা বেঁধে দিন।
আগ্রহ বাড়ান:
আপনাকে মনোযোগী হতে হলে আপনার
আগ্রহ বাড়াতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত
না আপনার আগ্রহ বাড়ছে আপনি কখনোই
মনোযোগী হতে পারবেন না। আর
এটা হতে পারে- আপনার কাছে সহজ ও
পছন্দের বিষয় দিয়ে শুরু করা এবং তুলনামূলক
কম সহজ বিষয় দিয়ে শেষ করা।
পড়ার পরিবেশ: এক্ষেত্রে আমি বলবো,
আপনার পড়ার জন্য একটি টেবিল ও চেয়ার
থাকা জরুরী। এই বস্তুগুলো এমন
স্থানে সাজাতে হবে যেন
আপনি আরামের সহিত বসতে পারেন।
আপনার মনোযোগের এক বিরাট
কেন্দ্রবিন্দু এই পরিবেশ।
যা আপনাকে উদ্দামতা এনে দিতে পারে।
একাগ্রচিত্ত: সুবিধা অনুযায়ী আপনার পড়ার
রুমে অন্য কোন কাজ কিংবা শব্দ
আসছে কিনা তা পরখ করে নিতে পারেন।
যদি আওয়াজ পান তাহলে তা বন্ধ করার
বেবস্থা করুন। এতেও যদি কাজ না হয়
আপনার রুমের আসে পাশেই
টিভি কিংবা গান চালু
আছে কিনা তা দেখে নিয়ে প্রয়োজনীয়
বেবস্থা নিন। সর্বোপরি, আপনার মোবাইল
ফোনটা বন্ধ করুন। দেখবেন মনোযোগ
বেড়ে যাবে।
নিয়মিত: পড়াশোনায় নিয়মিত
না হলে আপনার এর
থেকে বিচ্ছুতি ঘটবে তাই নিয়মমাফিক
পড়াশোনা করুন।
বিশ্রাম: আপনাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অবশ্যই
৬-৮ ঘণ্টার কম
কিংবা বেশি ঘুমনো যাবে না।
এতে আপনার শরীরের ভারসাম্য কিঞ্চিৎ
ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
খাওয়া-দাওয়া: পুষ্টিকর খাবার সময়মত
খেতে হবে। আর পড়াশোনায় বেস্ত
থাকলে ক্ষুধা একটু বেশিই লাগে। তাই
হাতের কাছেই কিছু শুঁকনো খাবার রাখুন
এবং প্রচুর পরিমানে পানি পান করুন।
এইতো গেলো আমার ফর্মাল আলোচনা।
এবার একটু ইনফর্মাল হই যে কোন কাজ
শুরু করার আগে আপনি মানসিকভাবে স্থির
হয়ে নিন। “Meditation” শব্দটার সাথে সবাই
পরিচিত। তাই
খানিকটা চেষ্টা চালিয়ে দেখুন
আশা করি ভালোভাবেই
শুরুটা করতে পারবেন। ভালো ছাত্র
বা ছাত্রীর সাথে নিজেকে কখনোই
তুলনা করবেন না, তাহলে নিজেই মনোযোগ
হারিয়ে ফেলবেন। আর্থিক ব্যাপারটাও
অনেকের দুশ্চিন্তার কারণ
হিসেবে থাকে যদি পারেন
এটা নিয়ে বেশি মাথা ঘামাবেন না।
মনে বল রাখুন কোন না কোন উপায় হবেই।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা রাখুন তিনি সব
ঠিকভাবে চালনা করবেন। যদি পারেন গ্রুপ
স্টাডি করতে পারেন এতে অনেক
ভালো ফল পাওয়া যায়। এছাড়া আরও
অনেক বিষয় রয়েছে।
সর্বশেষে দুটি কথা মনে রাখা জরুরি:
১. আপনার পিতামাতা আপনার পড়ালেখার
জন্য তাদের সাধ্য অনুযায়ী সর্বচ্চ
চেষ্টা করে থাকে তাই তাদের
প্রতিটা টা ত্যাগকে আপনি মূল্যায়ন
করবেন।
২. আপনার সৃষ্টিকর্তার নিকট আপনার ও
আপনার আশে পাশের মানুষের জন্য
প্রার্থনা করুন।
যাইহোক, আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে কিছু
লিখলাম। আপনাদের মূল্যবান মতামত
জানাতে ভুলবেন না। ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর
দৃষ্টিতে দেখবেন। আপনার পড়াশোনায়
মনোযোগী হওয়ার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
ভালো থাকবেন।
কবিতা by নির্মলেন্দু গুণ
কবিতা দিবসে একটা অসাধারণ কবিতা।
তোমার চোখ এত লাল কেন?
——————-নির্মলেন্দু গুণ
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
আমি চাই
কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক,
শুধু ঘরের ভিতর
থেকে দরোজা খুলে দেবার জন্য।
বাইরে থেকে দরোজা খুলতে খুলতে
আমি এখন ক্লান্ত।
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
আমি চাই
কেউ আমাকে খেতে দিক।
আমি হাতপাখা নিয়ে
কাউকে আমার
পাশে বসে থাকতে বলছি না,
আমি জানি, এই ইলেক্ট্রিকের যুগ
নারীকে মুক্তি দিয়েছে স্বামী-
সেবার দায় থেকে।
আমি চাই কেউ একজন
আমাকে জিজ্ঞেস করুক:
আমার জল লাগবে কিনা, নুন
লাগবে কিনা।
পাটশাক ভাজার সঙ্গে আরও একটা
তেলে ভাজা শুকনো মরিচ
লাগবে কি না।
এঁটো বাসন গেজ্ঞি-রুমাল আমি নিজেই
ধুতে পারি।
আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে,
আমি চাই
কেউ একজন ভিতর থেকে আমার ঘরের
দরোজা
খুলে দিক।কেউ আমাকে কিছু
খেতে বলুক।
কাম-বাসনার সঙ্গী না হোক, কেউ
অন্তত আমাকে
জিজ্ঞেস করুক: ’তোমার চোখ এত লাল
কেন?’